ঝিনাইদহে বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) টানা ৯ম দিনের পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে আয়োজিত পথসভায় দলটির নেতারা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন।
পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি মানবতাবিরোধী খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। গত ২৫ বছরে সীমান্তে ১২০০-র বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে তারা। যারা মানুষ হত্যা করে, তাদের টিগার হ্যাপি বলা যায় না, তারা খুনি। সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হলে আমাদের দাঁড়াতে হবে।’ ভারত সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করুন।’
পথসভায় দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ভারত আজ সেইফ হাউজ অব টেরোরিস্টে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা খুনি, আর যারা তাকে আশ্রয় দিয়েছে, তারাও টেরোরিস্টদের নিরাপদ আশ্রয়দাতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আর কখনও ক্ষমতায় ফিরবে না। বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতেই হবে।’
তিনি ভারত সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যদি আপনারা সত্যিই টেরোরিস্টদের আশ্রয় না দেন, তবে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করুন। জনগণ তাকে বিচারের মুখোমুখি করবে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে।’
সভায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘হাসিনার নির্দেশেই ছাত্রজনতাকে খুন করা হয়েছে। তাকে অবিলম্বে ফাঁসির কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।’
দুপুর থেকেই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পায়রা চত্বরে জড়ো হতে থাকেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল হতেই শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সন্ধ্যা ৭টায় চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শেষ হয় পায়রা চত্বরে পথসভায়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, এডভোকেট মনোয়ারা মৌ, নিহত রাকিবের বাবা আমোদ আলী মন্ডল ও মা হাফিজা খাতুনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন এসসিপি নেতা ডা. তানসিম জারা। পথসভা শেষে নেতারা শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুতে নিহত এনসিপি কর্মী সাব্বির ও রাকিবের কবর জিয়ারত করেন।
বিআরএসটি/এসএস