রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
BRS TIMES
আন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদ

ক্ষমা চাইলেন থাই প্রধানমন্ত্রী

একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে ক্ষমা চেয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়তুনতার্ন শিনাওয়াত্রা। ফোনালাপে দেওয়া মন্তব্য নিয়ে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি, তার নেতৃত্বাধীন সরকারও সংকটে পড়েছে। জোট সরকারের ভাঙন শুরু হওয়ায় থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। এমনকি নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান ও বার্তা সংস্থা এএফপি-র বরাতে জানা গেছে, ফাঁস হওয়া ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী পায়তুনতার্নকে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়। হুন সেন শিনাওয়াত্রা পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কথোপকথনে থাই সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ‘বিরোধীমতের’ বলে উল্লেখ করেন পায়তুনতার্ন। তিনি হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ সম্বোধন করে বলেন, ‘আপনি আমাকে জানালে আমি ব্যবস্থা নিতে পারতাম।’

এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সংবাদ সম্মেলনে পায়তুনতার্ন বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় জনমনে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

এই ঘটনার পর থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। যদিও পুরো অডিওটি প্রথম প্রকাশ করেন হুন সেন নিজেই। শুরুতে একটি সংক্ষিপ্ত ক্লিপ ফাঁস হলেও পরে তিনি তা পুরোপুরি প্রকাশ করেন।

ফোনালাপ ফাঁসের জেরে জোট সরকারের বড় অংশীদার ভুমজাইতাই পার্টি সরকার থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এতে জোট সরকারের পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা ন্যূনতম সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নেমে এসেছে। চাটথাইপট্টানা, ইউনাইটেড থাই নেশন ও ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতারা জরুরি বৈঠকে বসেছেন— তারা সরকারে থাকবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা করছেন।

বিরোধীদল পিপল’স পার্টির নেতা নাট্তাফং রুয়েংপন্যাওয়ুত ইতোমধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচন আহ্বানের দাবি তুলেছেন, যাতে ‘গণতন্ত্রবিরোধী উসকানি’ বন্ধ করা যায়। তিনি সম্ভাব্য সামরিক অভ্যুত্থান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে ১৯৩২ সালে রাজতন্ত্রের অবসানের পর থেকে একাধিক সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে।

শিনাওয়াত্রা পরিবার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। পায়তুনতার্নের বাবা থাকসিন শিনাওয়াত্রা ২০০৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। পরে তার ফুফু ইংলাক শিনাওয়াত্রাও ২০১৪ সালে আদালতের রায়ে ও সেনা হস্তক্ষেপে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান।

এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার শত শত সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী, যাদের মধ্যে অনেকেই রাজতান্ত্রিক ‘ইয়েলো শার্ট’ আন্দোলনের কর্মী ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী অফিসের সামনে জড়ো হয়ে পায়তুনতার্নের পদত্যাগ দাবি করেন। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, যা থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিআরএসটি / জেডএইচআর

Related posts

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে আমেরিকাকে জড়িয়ে বড় জুয়া খেলছেন ট্রাম্প

brs@admin

সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে পারে: মির্জা ফখরুল

brs@admin

গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যায় গ্রেপ্তার ৭ জন

brs@admin

শেখ হাসিনাকে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত রাখতে মোদিকে অনুরোধ

brs@admin

এএসপি আরিফুজ্জামান বরখাস্ত

News Desk

পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

brs@admin
Translate »