রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
BRS TIMES
আন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদ

প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি থেকে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, সুশীলা কারকির উত্থান কীভাবে

নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সুশীলা কারকি এখন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের পর দেশজুড়ে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৫১ জন নিহত হওয়ার পর যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, সেই সংকটকালে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এসেছেন তিনি।

গত মঙ্গলবার ব্যাপক সহিংসতার মুখে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন। এরপর শুক্রবার সুশীলা কারকিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউদেল। শপথ গ্রহণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দায়িত্ব নেন।

বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। তিনি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর স্বার্থের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। এর জেরেই এক বছরের কম সময়ে তাকে অভিশংসনের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে জনগণের চাপের মুখে সেই প্রস্তাব বাতিল হলেও হতাশ হয়ে তিনি পদত্যাগ করেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে এল ভান্ডারি রয়টার্সকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব আনা হয়েছিল…কিন্তু তিনি কখনো নিজের নীতি থেকে সরেননি। নেপালের সংকট সামলানোর জন্য তিনিই জুতসই পছন্দ।’ একইসঙ্গে আইনজীবী দীপেন্দ্র ঝা বলেন, ‘তিনি ভালো পছন্দ, তবে তার সঙ্গে একটি ভালো দল থাকতে হবে।’

অলির পদত্যাগের পর সহিংসতা কিছুটা কমলেও এখনো দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। সেনারা রাস্তায় টহল দিচ্ছে এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি বা প্রশাসনে সরাসরি অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও নীতিগত দৃঢ়তার কারণে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী নেতৃত্বে আনা হয়েছে।

১৯৫২ সালে নেপালের শঙ্করপুর গ্রামের কৃষক পরিবারে জন্ম সুশীলার। সাত ভাই–বোনের মধ্যে তিনি বড়। ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার পর ১৯৭৯ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। শিক্ষার্থী থাকাকালে তিনি নেপালি কংগ্রেসে যুক্ত ছিলেন এবং পঞ্চায়েতব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। সে সময় তিনি কিছুদিন কারাবাসও করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই তিনি অন্যদের শিক্ষায় উৎসাহ দিতেন। তার ছোট বোন জুনু দাহাল ২০১৬ সালে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘শৈশব থেকেই তিনি সবাইকে সমান চোখে দেখতেন এবং আমাদের স্কুলে যেতে উদ্বুদ্ধ করতেন।’ ওই বছরই সুশীলা কারকি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব পাওয়ার পর ভারতীয় টিভি চ্যানেল সিএনএন–নিউজ এইটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুশীলা বলেন, ‘আমরা দেশের জন্য নতুন কোনো সূচনার চেষ্টা করব।’ তিনি নেপালের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিআরএসটি / জেডএইচআর

Related posts

পশ্চিমা পোশাকে নজর কাড়লেন ফারিণ

News Desk

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ

News Desk

মিয়ানমারের মতো বাংলাদেশেও একই মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কা, সতর্ক থাকার অনুরোধ

brs@admin

ন্যাটোর সম্মিলিত গোলাবারুদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন করে রাশিয়া: রুট

brs@admin

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলারে

brs@admin

পাকিস্তানের জন্য ৩৪০ কোটি ডলারের ঋণ নবায়ন করলো চীন

brs@admin
Translate »