28.4 C
Bangladesh
শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
BRS TIMES
আন্তর্জাতিকপ্রচ্ছদ

পারমাণবিক অস্ত্রাগার সমৃদ্ধ করছে চীন, শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন সামরিক ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রচলিত সামরিক শক্তির পাশাপাশি চীন দ্রুতগতিতে তার পারমাণবিক বাহিনীর আকার ও সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বুধবার (২০ আগস্ট) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কৌশলগত কমান্ডের প্রধান জেনারেল অ্যান্থনি কটন চলতি বছরের মার্চে কংগ্রেসকে জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নির্দেশ দিয়েছেন যে ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে। এজন্য চীন স্থল, আকাশ ও সমুদ্র থেকে আঘাত হানতে সক্ষম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে।

যদিও চীন তাদের ২০২৩ সালের জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিতে পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, তারা কোনো পরিস্থিতিতেই প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ এই নীতির আওতায় চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—যেসব দেশে পারমাণবিক অস্ত্র নেই, তাদের বিরুদ্ধে এমন অস্ত্র ব্যবহার করবে না এবং এমনকি ব্যবহারের হুমকিও দেবে না।

এ বিষয়ে বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, পারমাণবিক যুদ্ধে জয়লাভ সম্ভব নয় এবং তা শুরু করাও উচিত নয়। তারা বলছে, চীন কেবল আত্মরক্ষামূলক পারমাণবিক কৌশল অনুসরণ করে এবং ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের বার্ষিক প্রতিবেদনে ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, চীনের প্রকাশ্য অবস্থান সত্ত্বেও তাদের সামরিক কৌশলে এমন পরিস্থিতি রয়েছে যেখানে প্রচলিত সামরিক আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় তারা প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। বিশেষ করে, যদি সেই আক্রমণ তাদের পারমাণবিক বাহিনী, কমান্ড বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে অথবা পারমাণবিক হামলার সমপর্যায়ের ক্ষতি করে।

গত বছরের শেষ দিকে প্রকাশিত পেন্টাগনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ানে প্রচলিত যুদ্ধে পরাজয় যদি চীনা কমিউনিস্ট শাসনের টিকে থাকার জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হয়ে ওঠে, তাহলে বেইজিং প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

অন্যদিকে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে বলেছে, পশ্চিমা দেশগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ‘চীনা পারমাণবিক হুমকি’ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করা এবং চীনকে কলঙ্কিত করার একটি কৌশল।

শিকাগোভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা বুলেটিন অফ দ্য অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস এর মূল্যায়নে বলা হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তুলনায় চীন দ্রুতগতিতে তার অস্ত্র ভাণ্ডার সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ করছে। বর্তমানে তাদের হাতে প্রায় ৬০০টি ওয়ারহেড রয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, চীন প্রায় ৩৫০টি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো নির্মাণ করছে এবং রোড-মোবাইল লঞ্চারের জন্য একাধিক নতুন ঘাঁটি গড়ে তুলছে। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) হাতে স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য মোট ৭১২টি লঞ্চার রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৪৬২টিতে এমন ক্ষেপণাস্ত্র বসানো সম্ভব যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম।

তবে বুলেটিনের তথ্যমতে, পিএলএর অনেক লঞ্চার স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য, যা মূলত আঞ্চলিক লক্ষ্যে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি এবং সেগুলোর বেশিরভাগই পারমাণবিক হামলার জন্য নির্ধারিত নয়।

পেন্টাগনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে চীন কার্যকরী পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তারা কম শক্তির নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে একাধিক মেগাটন বিস্ফোরণক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে।

বিআরএসটি / জেডএইচআর

Related posts

নির্বাচন উপলক্ষে দেড় লাখ পুলিশকে ট্রেনিং দেওয়া হবে: প্রেস সচিব

News Desk

ফের সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অংশ নিচ্ছে ৩০টি রাজনৈতিক দল

brs@admin

দ্রুততম সময়ে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন

News Desk

বাংলাদেশি পাসপোর্টে এখন ভিসা লাগবে না ৩৯ দেশে

News Desk

পিরোজপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা আটক‎ ‎

News Desk

২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসএসসির ফল প্রকাশ

brs@admin
Translate »