বিধানসভা নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় বাকি থাকতেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে উত্তেজনা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আলিপুরদুয়ারে এক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের মানুষ পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ আজ একাধিক সংকটের মুখে—সহিংসতা, নারীদের নিরাপত্তাহীনতা, বেকারত্ব, প্রশাসনের প্রতি আস্থার অভাব এবং শাসক দলের ‘স্বার্থপর রাজনীতি’। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে হাজার হাজার পরিবার ধ্বংস হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। আদালতকে প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে, অথচ সরকার শুধু তোষণের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ঘিরে মুর্শিদাবাদ ও মালদায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘সরকারের সমর্থকরা মানুষের ঘরবাড়ি চিহ্নিত করে পুড়িয়ে দেয়, আর পুলিশ দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।’
অপারেশন সিন্দুর অভিযান নিয়ে সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের শক্তি জবাব দিয়েছে সেনা এবং পাকিস্তানকে এমনভাবে আঘাত করা হয়েছে, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি।
তবে মোদির এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যখন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ভারতের অবস্থান বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে, তখন প্রধানমন্ত্রী অপারেশন সিন্দুরকে রাজনৈতিক অস্ত্র বানাচ্ছেন। তিনি বলেন, ’যদি মন এত পরিষ্কার হয়, তবে পহেলগামের হামলাকারীদের এতদিন ধরা হয়নি কেনো।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বিজেপিই মালদা ও মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, তৃণমূল মানবিক রাজনীতি করে, আর বিজেপি বিভেদ ও দাঙ্গার রাজনীতি করে।
সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মোদী ও বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘সাহস থাকলে আগামীকালই বাংলায় নির্বাচন করুন। আমরা প্রস্তুত, বাংলা প্রস্তুত। বাংলার মানুষ আমাদের সাথেই আছে।’ তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
বিআরএসটি / জেডএইচআর