ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তারা যেন কোনোভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অত্যন্ত সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।
বৈঠক শেষে ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইসিকে বিশেষভাবে বলেছি, যেসব কর্মকর্তা বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ, তারা যেন কোনোভাবেই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না পারেন বা প্রভাব ফেলতে না পারেন। নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে কঠোর সতর্ক থাকতে হবে। এটি আমাদের আলোচনার অন্যতম মূল বিষয় ছিল।’
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা চাই, সরকার ও নির্বাচন কমিশন মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনুক, যে আমরা এবার সঠিক পথে যাচ্ছি, অন্যায়ের পথে নয়। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং একটি গুণগত পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণবিধি আইনেই নির্ধারিত রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সেই বিধান বাস্তবায়ন করা, যাতে নির্বাচন হয় সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি, নির্বাচন কমিশনের মনোভাব দেখে আমরা বিশ্বাসী হয়েছি যে তারা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম হবেন।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, ‘যখন দৃশ্যমান হবে যে সরকার ও ইসি সত্যিই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, তখন জনগণের মন থেকে ভয় কেটে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে এবং নির্বাচনের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে। তার জন্য সরকারকে দৃশ্যমানভাবে প্রমাণ করতে হবে তাদের নির্বাচনের ফলাফলে কোনো স্বার্থ নেই। ১৮ কোটি মানুষকে তা বোঝাতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত ১৭ বছরে প্রশাসনকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন আসলে প্রহসনের নির্বাচন ছিল। এটি শুধু আমাদের কথা নয়, বরং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যেমন দ্য ইকোনমিস্ট, নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যমও বলেছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব কর্মকর্তা ক্ষমতাসীন দলের হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করেছিলেন, তাদের কারণেই সেই নির্বাচনগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাই এবার ইসিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিআএসটি/এসএস

