নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের জন্য বিচারপতি থাকা অবস্থায় তিনি ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছিলেন। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মাত্র এক বছর নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করলেও, ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কেপি শর্মা ওলি প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিলে সুশীলা কার্কির নাম আলোচনায় আসে। এরপর থেকেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসতে থাকে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, সুশীলা কার্কির স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদী জড়িত ছিলেন নেপালের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ১৯৭৩ সালের বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায়। তিনি সেই সময় নেপালি কংগ্রেসের তরুণ নেতা ছিলেন এবং রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন।
সেই বছরের ১০ জুন, রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিরাটনগর থেকে কাঠমান্ডুর পথে ছিল। বিমানে ছিলেন ভারতীয় প্রখ্যাত অভিনেত্রী মালা সিনহাসহ মোট ১৯ জন যাত্রী। মাঝআকাশে দুর্গা প্রসাদ পাইলটের মাথায় পিস্তল ধরে বিমানটিকে ভারতের বিহার রাজ্যের ফোরবেসগঞ্জে অবতরণে বাধ্য করেন।
বিমানটিতে তখন নেপালের সরকারি ব্যাংকের প্রায় ৪০ লাখ রুপি বহন করা হচ্ছিল। সেই অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে গাড়িযোগে ভারতের দার্জিলিং হয়ে তা ফেরত পাঠানো হয় নেপালে। এই পুরো অপারেশনের পরিকল্পনাকারী ছিলেন নেপালি কংগ্রেসের তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা গিরিজা প্রসাদ কৈরালা, যিনি পরবর্তীতে চারবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন। পরে দুর্গা প্রসাদ ও তার সহযোগীরা মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার সময় ছাড়া পান।
ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে সুশীলা কার্কির সঙ্গে পরিচয় হয় দুর্গা প্রসাদ সুবেদীর। পরে তারা বিয়ে করেন এবং তাদের এক সন্তান রয়েছে।
বিআরএসটি / জেডএইচআর