ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের দিকে প্রতিদিনই নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (১৭ আগস্ট) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
তিনি রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাত প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দুই পক্ষ সমানভাবে থামতে রাজি না হলে কোনো যুদ্ধবিরতিই স্থায়ী হয় না। সেই সঙ্গে তিনি ভারত–পাকিস্তান প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
মার্কো রুবিও বলেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন এবং তা যেকোনো ভেঙেও যেতে পারে। রুবিও বলেন, যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় জটিলতা হলো সেটি বজায় রাখা। এ বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রতিদিন আমরা খেয়াল রাখছি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কী ঘটছে।’
একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই প্রতিবেশী পরাশক্তির মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত এড়াতে ভূমিকা রেখেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একাধিকবার দাবি করেছেন, তার মধ্যস্থতায় দিল্লি ও ইসলামাবাদ গত মে মাসে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘সেটি হয়তো পারমাণবিক সংঘাতে গড়াতো, আমি সেটি ঠেকিয়েছি।’ কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর থামানোর জন্য কেউ চাপ দেয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করও জানান, কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি আসেনি।
অন্যদিকে পাকিস্তান শুরু থেকেই ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিয়ে আসছে এবং ইসলামাবাদে এ প্রচারণা চলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণেই সীমান্তে শান্তি ফিরেছে।
এরইমধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির দু’বার ওয়াশিংটন সফর করেছেন। মার্কিন প্রশাসন ইসলামাবাদকে পাশে টানতে তেল সরবরাহ চুক্তিও ঘোষণা করেছে।
এই দ্বৈত চিত্রেই ভারতের গুরুত্ব বাড়ছে। কারণ ওয়াশিংটনের কাছে ভারত এখন শুধু পাকিস্তান–প্রসঙ্গেই নয়, বরং রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্কের কারণে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দিল্লি মস্কো থেকে তেল কিনছে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। তাই মার্কিন কূটনীতি চাইছে ভারতকে কাছে টানতে এবং পাকিস্তানকেও আংশিকভাবে সন্তুষ্ট রাখতে।
সব মিলিয়ে, মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিতে ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক এখনও নাজুক। আমেরিকা প্রতিদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে ভারতের অবস্থান একটাই—যুদ্ধবিরতি দিল্লির সিদ্ধান্ত, বাইরের কোনো হস্তক্ষেপে নয়।
বিআরএসটি / জেডএইচআর

